আজ বুধবার, ১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

তিনি একজন ‘ধনী কমরেড’

সংবাদচর্চা রিপোর্ট :

তিনি হাফিজুল ইসলাম। সিপিবির নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি। নিজেকে মেহনতি মানুষের ‘বন্ধু’ হিসেবে দাবি করেন। কমরেড হাফিজুল ইসলাম নামে পরিচিত। যদিও কমরেডরা সাধারণ জীবন যাপনে অভ্যস্ত। দারিদ্রতাকে সঙ্গে নিয়ে তারা খেটে খাওয়া মানুষের মতই চলাফেরা করেন। কিন্তু কমরেড হাফিজুল ইসলাম এ ক্ষেত্রে একদমই ব্যাতিক্রম। ‘ধনী কমরেড’ হিসেবে তারা খ্যাতি অনেক।
শুধু ধনী কমরেড বললেও ভুল হবে। তিনি একজন ‘সৌখিন, বিলাসী কমরেড’ হিসেবেও পরিচিত। ধনীদের হসপিটাল হিসেবে পরিচিত ঢাকার ইউনাইটেড ছাড়া সরকারি বা নরমাল কোনো হসপিটালে তারা চিকিৎসা হয় না। সময় পেলেই ছুটে যান দেশ বিদেশ ট্যুরে। অবয়বে তার ধনাঢ্যের ছাপ। চাকিচিক্যময় জীবন। বরাবরই তিনি থাকে পরিপাটি একজন শিল্পপতির ন্যায়। তার এমন চলন বলন দেখে অনেকে বিশ^াস করতেও পারেন না তিনি বামপন্থী নেতা!
গার্মেন্ট শ্রমিকদের অধিকারের আন্দোলনে তাকে প্রায় সময় সোচ্চার দেখা যায়। বিভিন্ন ইস্যুতে অধিকার বিষয়ক আন্দোলনেও তাকে সোচ্চার হতে দেখা গেছে। বর্তমানে শহরে হকার নামক অবৈধ দখলদারদের পক্ষে সোচ্চার রয়েছেন এই ধনী কমরেড। নিয়মিতই তাদের পক্ষে কথা বলছেন। তুলে ধরছেন নানা ধরণের যুক্তি। তিনি চান হকার নামক এসব দখলদাররা ফিরুক ফুটপাতে। যদিও এসব হকারদের তুলে দেওয়ায় নগরীর লাখ লাখ মানুষ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু তিনি কিছুতেই তিনি এমন সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না। অনেকের কাছে বিষয়টি ‘ডাল ম্যা কুচ কালা হ্যায়’ এর মতই মনে হচ্ছে। বেরসিক নগরবাসী তো বলেই ফেলছেন, ‘হকারদের ঘিরে কোটি টাকার চাঁদাবাজি হয়। এই চাঁদার ভাগ হয়তো এই ধনী কমরেড পেয়ে থাকতে পারেন। তা না হলে এদের জন্য তার এত মায়াকান্না কেন!’
কারো কারো মতে, ফুটপাতে এসব দখলদার বসলেই হয়তো মাস ঘুরলেই তার পকেটের তাপ বেড়ে যায়। যার কারণে তিনি হকারদের পক্ষে এতটা ক্ষিপ্র হচ্ছেন। আগুল উঁচিয়ে সাংসদ সেলিম ওসমানকে প্রশ্নও ছুড়ে দিচ্ছেন। কৈফিয়ত চাচ্ছেন এই সাংসদের কাছে। তাদের মতে, ইদানিং দখলদাররা ফটুপাত দখল করতে পারছেন না বলে তার পকেটের তাপও বাড়ছে না। এ কারণেই হয়তো তিনি এতটা ক্ষিপ্র।
সূত্র বলছে, গতকাল নগরীর চাষাড়া শহীদ মিনারে জেলা শ্রমিক কর্মচারি সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত এক সমাবেশ থেকে হাফিজুল ইসলাম তার বক্তব্যে সেলিম ওসমানের কাছে কৈফিয়ত জারি করেন। তিনি এই সাংসদের কাছে জানতে চান, ‘হকাররা ফুটপাতে বসলে যানজটের সৃষ্টি হয় আর আপনারা যখন গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিকেএমইতে বসে মিটিং করেন, তখন আপনাদের গাড়ি যখন রাস্তার ওপরে রেখেছিলেন তখন কি যানজট হয়নি?’
নগরবাসী বলছেন, সম্প্রতি মেয়র, এমপি অনেকেই কতিথত ক’জনকে ‘উচ্ছিষ্ট বাম’ হিসেবে অবহিত করে বক্তব্য রেখেছিলেন। মেয়র ধিক্কার জানিয়েছিলেন যারা হকার নামক দখলদারদের জন্য মায়াকান্না করেন। শামীম ওসমান বলেছিলেন, তারা ‘উচ্ছিষ্ট বাম’। তখন নগরবাসী প্রশ্ন তুলেছেন এরা আসলে কারা? সাম্প্রতিক হকার নামক দখলদারদের নিয়ে যারা মায়াকান্না কাঁদছেন মূলত তারাই সেসব উচ্ছিষ্ট বাম বলেই মনে করছেন সচেতন নাগরিক সমাজ।

সর্বশেষ সংবাদ